• আপডেট টাইম : 25/11/2023 09:24 PM
  • 207 বার পঠিত
  • আওয়াজ ডেস্ক
  • sramikawaz.com

প্রতিদিনের মত শনিবার ২৫ নভেম্বর সকালেও কাজে যাচ্ছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। কিন্তু কর্মস্থলে পৌঁছানোর আগেই বেপরোয়া গতির লরির ধাক্কায় তাদের মধ্যে তিনজন চলে গেলেন না ফেরার দেশে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ওয়্যারলেস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনাস্থলে নিহত শ্রমিকদের জুতা দেখিয়ে শামসুদ্দীন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আহারে মানুষের জীবন। যারা ১০ মিনিট আগেও জীবন্ত ছিল, এখন মুহূর্তে নাই হয়ে গেলো। জুতোগুলো পড়ে রইলো, মানুষগুলো হারিয়ে গেলো।

নিহত তিনজন হলেন- পাবনার সুজানগর থানার সৌখেতু পাড়ার আবুল কালামের ছেলে মো. আলমগীর হোসেন (৪৫), একই থানার রায়পুর এলাকার মালেক ব্যাপারীর ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (৪২) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানার আন্দিদিল এলাকার হুমায়ন কবিরের ছেলে মাসুদ মিয়া (৩৫)।

জানা গেছে, কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির ঠিকাদার হিসেবে বারইয়ারহাট থেকে চট্টগ্রাম গ্যাসলাইন স্থাপনের কাজ পায় দিপন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। সকালে কাজে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামমুখী একটি বেপরোয়া গতির লরি তিনজনকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলে দুজন ও হাসপাতালে আরও এক শ্রমিক মারা যান।

নিহতদের সহকর্মী ও কোম্পানির পাইপ ওয়েল্ডার মো. লাভলু বলেন, আমাদের লোকজন সকালে কাজের প্রস্তুতি নিয়ে বাসা থেকে মহাসড়ক পার হয়ে সড়কের ফুটপাতে হাঁটলে তাদের ধাক্কা দেয় লরিটি। তাদের শরীরের অংশ ও রক্ত রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। চালক ঘুম চোখে গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা রাতে একই রুমে ছিলাম। সকালে তাদের এমন মৃত্যু দেখবো কল্পনাও করিনি। একজনকে দুই কিলোমিটার থেঁতলে নিয়ে গেলে বাদামতলী এলাকার বাসিন্দারা গাড়িটি আটকায়। গুরুতর আহত ওই শ্রমিক এখন মেডিকেলে আছেন।

মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দারোগাবাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে কোম্পানির স্টাফরা থাকেন। রুমের বাবুর্চি নজরুল আলী শেখ বলেন, সকালে তারা যখন কাজের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে বাসা থেকে বের হন, তখন কথা হয়েছিল। আমি তাদের জন্য রান্না করি। রাস্তার ফুটপাতে গিয়ে তাদের গাড়ি এভাবে মারলো। আবার একজনকে টেনে নিয়ে যায় দুই কিলোমিটার। এটি দুর্ঘটনা হতে পারে না। এটি হত্যাকাণ্ড। আমরা উপযুক্ত বিচার চাই।

মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ছলিম উদ্দিন বলেন, আমি সকাল সাড়ে ৭টায় দুর্ঘটনার খবর শুনে ঘটনাস্থলে যাই। তিনজন মারা যান। আমি জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানায় ফোন করে জানাই। পুলিশ এসে গাড়ি আটক করে এবং নিহতদের মরদেহ নিয়ে যায়।

জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার ইনচার্জ সোহেল সরকার বলেন, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ওয়্যারলেস এলাকায় চট্টগ্রামমুখী দ্রুতগামী লরির ধাক্কায় তিনজন নিহত হয়েছেন। লরিটি আটক করে থানায় আনা হলেও চালক পালিয়েছেন।

ইনচার্জ সোহেল আরও বলেন, ধারণা করছি লরি চালক চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। না হয় রাস্তার পাশে গিয়ে মানুষের ওপর গাড়ি তুলে দেওয়ার কথা না। নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত একজনের ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...