• আপডেট টাইম : 15/10/2022 10:35 PM
  • 385 বার পঠিত
  • প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  • sramikawaz.com

স’মিল শিল্প সেক্টরের জন্য সরকার গঠিত নি¤œতম মজুরি বোর্ড ঘোষিত মজুরি এবং নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র প্রদান ও ৮ ঘন্টা কর্মদিবস নির্ধারণসহ অবিলম্বে শ্রমআইন বাস্তবায়নের দাবিতে দেশব্যাপী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন স’মিল শ্রমিকনেতা। ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশ স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে সারাদেশের স’মিল সেক্টরে ক্রিয়াশীল সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এই আহবান জানান। ফেডারেশনের ৮ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ(৩য় তলা), গুলিস্তানস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি প্রবীণ শ্রমিকনেতা মোঃ খলিলুর রহমান। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাসের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই সভায় ঢাকা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, রংপুর, পাবনা, শেরপুর, ফেনী, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে স’মিল সেক্টরের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। মতবিনিময় সভায় স’মিল শ্রমিকদের দাবির প্রতি একতœতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের যুগ্ম-সম্পাদক মোঃ ইয়াছিন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম ভূইয়া ও বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন। মতবিনিময় সভায় স’মিল শ্রমিক নেতৃবেন্দর মধ্যে ঢাকা স’মিল ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোঃ বাচ্চু মিয়া ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনূছ বাহাদুর, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আইয়ুবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, ময়মনসিংহ স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল মান্নান, রংপুর স’মিলস ওয়ার্কাস ইউনিয়নের নেতা জাহিদুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ স’মিল শ্রমিক সংঘের সভাপতি সিরাজ মিয়া, শেরপুর জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মিজানুর রহমান, পাবনার সুজানগর স’মিল শ্রমিক ইউনয়িনের সাধারণ সম্পাদক শাহাকুল ইসলাম, ফেনী করাতকল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল হালিম, ফরিদপুর জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ফেঞ্চুগঞ্জ স’মিল শ্রমিক সংঘের নেতা কাওছার মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা রুবেল মিয়া, নবীগঞ্জ স’মিল শ্রমিক সংঘের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফাত আলী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, কমলগঞ্জ স’মিল শ্রমিক সংঘের সভাপতি মোঃ মোস্তাক মিয়া, গঙ্গাছড়া উপজেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা বাবুল মিয়া, মিঠাপুরক স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মেরাজুল ইসলাম প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন প্রায় ৮ বছর পর গত ৬ জুন সরকারের নি¤œতম মজুরি বোর্ড স’মিল শিল্প সেক্টরেরর শ্রমিকদের জন্য নি¤œতম মজুরি হার গেজেট আকারে প্রকাশ করে। সরকার ঘোষিত নি¤œতম মজুরি অনুযায়ী শ্রমিকদের এলাকা ভেদে সর্বোচ্চ মাসিক মোট মজুরি ২৭,৮৫০ টাকা( দৈনিক ১০৭৫ টাকা) ও সর্বনি¤œ মাসিক মোট মজুরি ১৭,৯০০ টাকা (দৈনিক ৬৯০ টাকা) এবং শিক্ষানবিস শ্রমিকদের মাসিক মোট মজুরি ১১,০০০ টাকা (দৈনিক ৪৫০ টাকা) নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও গেজেটে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরির সাথে বার্ষিক ৫ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধির (ইনক্রিমেন্ট) কথা বলা হয়েছে। নেতৃবন্দ বলেন বাংলাদেশ স’মিল শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দাবি করা মজুরির তুলনায় সরকার ঘোষিত মজুরি অনেক কম। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতির বাজারে স’মিল শ্রমিকরা দিশেহারা। চাল, ডাল, তেল, লবন, চিনি, পিয়াজ, শাক-সবজি, মাছ-মাংস, দুধ-ডিম, ঔষুধপত্রসহ নিত্যপণ্যে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি দফায় দফায় জ্বালানি তেল, গ্যাস, বাড়িভাড়া-গাড়িভাড়া বৃদ্ধির কারণে শ্রমিকদের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আবারও গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। শ্রমিকদের এই দূর্দশার সময়ে সরকারের নি¤œতম মজুরি বোর্ড ঘোষিত মজুরি বাজারদরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া যৌক্তিক ছিল। তদুপরি প্রতিনিয়ত স’মিল শ্রমিকদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের জন্য কর্মক্ষেত্রে ন্যূনতম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স’মিলে কর্মরত শ্রমিকদের শতকরা ৬০ ভাগ দূর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অঙ্গহানি হয়, কোন কোন ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। কাজ করতে যেয়ে এ সমস্ত দূর্ঘটনার শিকার শ্রমিকের উপযুক্ত চিকিৎসা যেমন মালিক করে না, তেমননি অঙ্গহানি ও মৃত্যুর জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপুরণও মূলত দেওয়া হয় না। স’মিলের মালিকরা শ্রমআইন, রাষ্ট্রীয় আইনের তোয়াক্কা করেন না। শ্রমআইন অনুযায়ী নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিসবুক প্রদান, দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের দ্বিগুণ মজুরি, মজুরিসহ সাপ্তাহিক ছুটি, নৈমিত্তিক ছুটি, চিকিৎসা ছুটি, উৎসব ছুটি, অর্জিত ছুটি ইত্যাদির প্রদানের বিধান থাকলেও তা প্রদান করা হয় না। এমতবস্থায় দাবি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
সভায় স’মিল শিল্প সেক্টরে সরকার ঘোষিত নি¤œতম মজুরি এবং শ্রমআইনের যথাযথ বাস্তবায়নসহ ০৯ দফা দাবি আদায়ে দেশব্যাপী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগামী দুই মাস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিলসহ সাংগঠনিক প্রস্তুতি অগ্রসর করে দেশব্যাপী একযোগে কর্মসূচি ঘোষণা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...