রূপগঞ্জে হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজের  (সেজান জুস) কারখানায় অগ্নিকান্ডে ৫৪ শ্রমিক-কর্মচারী নিহতের ঘটনায়  মালিকসহ দায়ীদের শাস্তি, নিহত-আহত শ্রমিকদের পরিবারকে আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুসারে আজীবন আয়ের মানদন্ডে ক্ষতিপূরণ প্রদান, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা।

১০ জুলাই মঙ্গলবার বিকেলে হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজের  অগ্নিকান্ডে ৫৪ শ্রমিক-কর্মচারী নিহতের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে রায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লবেরসভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সহসাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সোহাগ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার নেতা মোফাজ্জল হোসেন, আনোয়ার খান, সেজান জুস কারখানায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত রহিমার স্বামী মো, সেলিম প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও শ্রমিকদের এই নির্মম মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তি হয়নি, ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবারসমূহকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে মামলার চার্জশীট থেকে মালিক ও তার চার ছেলের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে সরকার ২ লক্ষ করে টাকা দিয়েছে। এটা কর্মস্থলে মালিকের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতায় নিহত শ্রমিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ হতে পারে না।

তাজরীন, রানা প্লাজা, সেজান জুস ইত্যাদি ঘটনাকেদুর্ঘটনা বলা যাবে না, এটা হত্যাকাণ্ডের শামিল উল্লেখ করে ন তারা বলেন, সেজান সুজ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পুনঃতদন্ত করে মালিকদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরওআইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। নিহতদের আই.এল.ও কনভেনশন ১২১ অনুসারে আজীবন আয়ের সমান মানদণ্ডে ক্ষতিপুরণ প্রদান করতে হবে। আহতদেরও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকার শুধু তৈরি পোশাক শিল্পে পাইলট প্রকল্প হিসাবে এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম (ইআইএস) চালু করেছে। শুধু পোশাক শিল্প নয়, সকল ক্ষেত্রে এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম (ইআইএস) চালু করতে হবে। শ্রমিকের নিরাপত্তার স্বার্থে আইএলও কনভেনশন ১৫৫ ও ১৮৭ এ বাংলাদেশকে অনুস্বাক্ষর করতে হবে।

সেজান জুসের হত্যাকান্ডের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করতে সহায়তা এবং ভবিষ্যতে কর্মক্ষেত্র্রে শ্রমিকের প্রাণহানি রোধ করতে করণীয় নির্ধারণে স্কপের পক্ষ থেকে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৭ দফা পর্যবেক্ষন ও ১২ দফা সুপারিশসহ স্কপের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস কমিটির রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে দাখিল কারা হয়েছিল।  তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।