• আপডেট টাইম : 19/03/2022 06:48 PM
  • 458 বার পঠিত
  • আওয়াজ ডেস্ক
  • sramikawaz.com

মহার্ঘ ভাতা প্রদান, নবম পে-স্কেল ঘােষণার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসনসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ। শনিবার (১৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক মাে. ওয়ারেছ আলী। তিনি বলেন, পে কমিশন গঠন করে নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের আগে অন্তর্বর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘােষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে। সচিবালয়ের ন্যায় সব দপ্তর, অধিদপ্তরের পদ-পদবী পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়ােগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ৮১ টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পুনঃবহাল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি বা আনুতােষিকের হার ৯০ শতাংশ এর স্থলে ১০০ শতাংশ নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি এক টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

তাদের দাবি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়ােগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে। আউট সাের্সিং পদ্ধতি বাতিল করে ওই পদ্ধতিতে নিয়ােগ করা ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। এ ছাড়া কর্মরত কর্মচারীসহ সব পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।

তারা আরও দাবি জানান, বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে সকল ভাতা পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সমন্বয়ক মাে. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে সচিবালয়ে উচ্চমান সহকারী, প্রধান সহকারী, শাখা সহকারী ও বাজেট পরীক্ষকদের পদবি প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং সাঁট লিপিকারদের পদবি ব্যক্তিগত কর্মকর্তা করে সচিবালয় ও সচিবালয়ের বাইরের কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। বর্তমানেও সব দপ্তর, অধিদপ্তরের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন না করে শুধুমাত্র বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পদবি পরিবর্তন করার বিষয়টি বৈষম্য নিরসন না করে পুনরায় বৈষম্যর বেড়াজাল তৈরি করা হচ্ছে। যা কোনোভাবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাশিত নয়। সচিবালয়ের বাইরে সকল দপ্তর ও অধিদপ্তরের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন ও ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা না হলে চরম বৈষম্য সৃষ্টি করা হবে। যা সাধারণ কর্মচারীরা কখনও মেনে নেবেন না।

সভাপতি আরও বলেন, ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের এই বঞ্চিত লাখ লাখ কর্মচারীদের বাদ দিয়ে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা সম্ভব নয়। বিষয়টি বিভিন্নভাবে সরকারের উচ্চ মহলে জানানো হয়েছে। কিন্তু তদুপরি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে ৭ দফা দাবি আদায়ের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিভাগ, ৮ এপ্রিল সিলেট বিভাগ, ৯ এপ্রিল ময়মনসিংহ বিভাগ, ১৫ এপ্রিল বরিশাল বিভাগ, ১৬ এপ্রিল খুলনা বিভাগ, ১৩ মে রংপুর বিভাগে বিভাগীয় সমাবেশ করা হবে। আগামী ২০ মে এর মধ্যে ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ২৭ মে ২০২২ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশের মাধ্যমে কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি ঘােষণা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ, বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতি, বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসােসিয়েশন, বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ, ১৭-২০ গ্রেড কর্মচারী সমিতি, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগীয় মাঠ কর্মচারী অ্যাসােসিয়েশন, বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরীজীবিদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...