• আপডেট টাইম : 29/05/2021 01:02 AM
  • 385 বার পঠিত
  • আওয়াজ ডেস্ক
  • sramikawaz.com

করোনা মহামারিতে কর্মহীন শ্রমিকদের খাদ্য, চিকিৎসা, অর্থ সহায়তা এবং শ্রমিকদের রেশন, স্বল্পমূল্যে আবাসন ও সার্বজনীন পেনশন চালু করতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ প্রদানের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। শুক্রবার ২৮ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, গত বছর বাজেট হয়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকার, সেটার সঙ্গে আরও ১০ হাজার টাকার থোক বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। মে মাসে খবর পেলাম ১০ হাজার কোটি টাকা করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যে বরাদ্দ যেটা হয়েছিল অতিরিক্ত তার মধ্যে মাত্র আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা সরকার খরচ করে নাই। তার মানে বরাদ্দ করার নামে সরকার বাহবা কুড়াবে কিন্তু ব্যয় করবে না।


তিনি বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের সামাজিক নিরাপত্তার কথা বলে বরাদ্দ নেবে, কিন্তু খরচ করবে না। উন্নয়ন বাজেটের ৬০ শতাংশ সরকার খরচ করেছে। বাকি ৪০ শতাংশ খরচ করে নাই। সরকার বিশাল বাজেটের বাহবা নেবে, কিন্তু বাজেট শেষে দেখা যাবে, যা বরাদ্দ করা হয়েছে শ্রমিকদের জন্য তা বিতরণ করা হয় নাই।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের এই নেতা আরও বলেন, করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার। অনলাইনে ক্লাস করতে বলছে, কিন্তু ক্লাস করার না আছে মোবাইল ফোন, না আছে ডাটা ব্যবহার করার সুযোগ। সাড়ে ৪ কোটি ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে আড়াই কোটি হচ্ছে আমাদের কৃষক, শ্রমিকের সন্তান। তারা কিভাবে ক্লাস করবে। তাদের শিক্ষাজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।

রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, আমরা বলেছি করোনাকালীন শ্রমজীবী সন্তানদের যেন স্বল্পমূল্যে মোবাইল ও ডাটা সরবরাহ করা হয়। সে কথা সরকার কানে নেয় নাই, বরং নতুন করে ডিভাইসের উপর ট্যাক্স আরোপের চেষ্টা করছে।

বক্তারা বলেন, করোনার সংক্রমণে সাধারণ জীবনযাত্রা যখন স্থবির সেই সময়ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা উৎপাদনের চাকা সচল রাখায় দুর্যোগেও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ১৯০৯ ডলার, যা গত দুই বছরে ৩১৮ ডলার বৃদ্ধি পেয়ে ২২২৭ ডলার হয়েছে। তবে দেশের সম্পদ বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির এই শ্রমিকদের আর আয় বৃদ্ধি কমেছে কমপক্ষে ২০ শতাংশ।


বিশ্ব ব্যাংকের বরাত দিয়ে বক্তারা বলেন, করোনায় বাংলাদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা যাদের দৈনিক আয় ১ দশমিক ৯ ডলারের কম তাদের সংখ্যা ১২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২২ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ করোনাকালে দেশের সম্পদ বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈষম্যের মাত্রা বেড়েছে। কয়েক হাজার মানুষ কোটিপতি হওয়ার বিপরীতে কোটি কোটি মানুষ দরিদ্র থেকে অতি দরিদ্রে পরিণত হচ্ছে। এই শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষ রাষ্ট্রের খরচের অধিকাংশ যোগান দেয়।

বক্তারা বলেন, করোনা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমজীবীদের জন্য বিশেষত মোট শ্রম শক্তির ৮৫ শতাংশ পর্যটন হোটেল রেস্টুরেন্ট, নির্মাণ, তাঁত, পাদুকা, কুলি, পরিবহন, হালকা যানবাহন চালকসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক এবং বিদেশ প্রত্যাগত শ্রমিকদের জন্য রাষ্ট্রয় উদ্যোগে কর্মসংস্থান, খাদ্য, চিকিৎসা অর্থ সহায়তার জন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ করার পাশাপাশি শ্রমজীবী মানুষের খাদ্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিয়ে শ্রমিকদের জন্য আর্মি রেটে রেশন, শ্রমিক অঞ্চলে চিকিৎসা কেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং সার্বজনীন পেনশন চালু করতে হবে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, কোষাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. বিমল চন্দ্র সাহা, ঢাকা নগর কমিটি ও বোম্বে সুইটস কোম্পানি লিমিনের সভাপতি সদস্য রতন মিয়া, বাংলাদেশ ট্যুরিজম অ্যান্ড হোটেল ওয়ার্কার এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আহ্বায়ক রাশেদুর রহমান রাশেদ প্রমুখ।
সুত্র. জাগো নিউজ

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...