• আপডেট টাইম : 18/04/2021 11:44 PM
  • 409 বার পঠিত
  • প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  • sramikawaz.com

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রে বেতনভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত নিরীহ শ্রমিকদের উপর পুলিশের বর্বরোচিত গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত ৫ জন শ্রমিককে নিহত এবং আরও অন্তত শতাধিক শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ।
১৮ এপ্রিল রোববার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বি¶োভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-সম্পাদক প্রকাশ দত্তের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখের জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অব:) জাহাঙ্গীর হোসাইন, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আখতারুজ্জামান খান, বাংলাদেশ সিএনজি অটো রিক্সা চালক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক শেখ হানিফ, ঢাকা পোশাক প্রস্তুতকারক শ্রমিক সংঘের সভাপতি মাহবুবুল আলম মানিক প্রমূখ। সভায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, এস আলম গ্রæপের মালিকাধীন বাঁশখালীর কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থানীয় শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া বেতনভাতা প্রদান, ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, কর্মঘন্টা ১০ থেকে কমিয়ে ৮ ঘন্টা নির্ধারণ, রমজান মাসে ইফতার ও নামাজের জন্য সময় নির্ধারণ, বাথরূমের জন্য পানির ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।
শ্রমিকরা শুক্রবারেও শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি পালন করেছেন। শনিবার সকালে শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করার কথা বলা হলেও মালিকপ¶ পুলিশ ডেকে জোরপূর্বক শ্রমিকদের কাজে যোগদানের চাপ দিতে থাকে। শ্রমিকরা কাজে যোগদানে অ¯^ীকৃতি জানিয়ে দাবি আদায়ে অনড় থাকলে পুলিশ বিনাউস্কানিতে নিরীহ শ্রমিকদের উপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করে। গণমাধ্যমে ৫ জন শ্রমিক নিহত হওয়ার সংবাদ আসলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের অভিযোগ পুলিশ ও মালিকপ¶ অনেক শ্রমিকের লাশগুম করে ফেলেছে।
শ্রমিক আন্দোলন দমনে এবং মালিকপ¶ের ¯^ার্থর¶ায় সরকারের ¯ৈ^রাচারী মনোভাবের উলঙ্গ বহিঃপ্রকাশ এই মর্মান্তিক ঘটনার মাধ্যমে আরও একবার দেশবাসীর সামনে উন্মোচিত হলো। নেতৃবৃন্দ এই ঘটনায় তীব্র ¶োভ প্রকাশ করে বলেন করোনা অতিমারির সময়ে যখন শ্রমিকদের বেতনভাতার সমস্যা সমাধানে সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের এগিয়ে আসার কথা সেই সময় পুলিশ অতীতের ন্যায় মালিকপ¶ের ¯^ার্থর¶ায় গুলি করে শ্রমিক হত্যা করেছে। যেমনটা ২০১৬ সালেও পুলিশ এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণে মালিকপ¶ের পাশে দাঁড়িয়ে ৪ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করেছিল।

এছাড়া ২০১৭ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে একজনকে হত্যা করা হয়েছিল। অথচ একটি হত্যাকান্ডেরও বিচার হয়নি। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের তাৎ¶ণিক মন্তব্য ‘ঘটনার সাথে স্থানীয়দের ইন্ধন আছে’ এবং ডিআইজি’র মন্তব্য ‘পুলিশ সবোর্চ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। নিরুপায় হয়ে গুলি করেছে।’ থেকেই বুঝা যায় সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটির ফলাফল কি হবে! সমাবেশে বক্তারা ¶োভ প্রকাশ করে বলেন, করোনা অতিমারির সময়ে সরকার রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল বন্ধ করে শ্রমিকদের পথে বসিয়েছে; চিনিকল বন্ধের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আর এখন বেতনভাতা চাওয়ায় শ্রমিকদের বুকে গুলি চালিয়েছে। শুধু তাই নয় সরকার শ্রমিকদের বেতনভাতা নিশ্চিত করতে না পারলেও মালিকদের ¯^ার্থর¶ায় কর্মঘন্টা সংক্রান্ত শ্রমআইনের ১০০, ১০২, ১০৫ নং ধারা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছে। এমনিতেই অধিকাংশ মালিকরা শ্রমিকদের ৮ ঘন্টার অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করলেও ওভারটাইমে দ্বিগুণ মজুরি পরিশোধ করে না। তার উপর সরকারের শ্রমআইনের ১০০, ১০২, ১০৫ নং ধারার উপর স্থগিতাদেশের কারণে মালিকদের বেপরোয়া লুন্ঠন ও শ্রমশোষণের সুযোগ করে দিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বের শ্রমআইনের উপর এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে বলেন, শ্রম অসন্তোষ দমনে প্রচলিত ট্রেড ইউনিয়ন তৎপরতাকে অ¯^ীকার করে সরকার মালিকদের ¯^ার্থর¶ায় সন্ত্রাস ও পুলিশী নির্যাতনের মাধ্যমে যে দমন পীড়ন চালাচ্ছে তা দেশের অর্থনীতি ও শিল্পের জন্য ভালো ফলাফল বয়ে আনবে না।
সমাবেশ থেকে বিতর্কিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের লাইসেন্স বাতিল, আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা ও ¶তিপুরণ প্রদান, মৃত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমপরিমান ¶তিপুরণ পরিবারকে প্রদান, সকল ¶েত্রে অবাধ ট্রেড অধিকার নিশ্চিত করা এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার সাথে প্রত্য¶ ও পরো¶ভাবে সংশ্লিষ্ট সকলের দুষ্ঠান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...